শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

কমদামে গরুর মাংস বিক্রি করতে কসাইদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

কমদামে গরুর মাংস বিক্রি করতে কসাইদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

জেলা প্রতিনিধি,লালমনিরহাট।।

বাজারের লাগামহীন দ্রব্যমূল্যে লালমনিরহাটের অধিকাংশ মানুষের খাবারের পাতে উঠছে না এই বিলাসী গরুর গোস্ত।

এমন পরিস্থিতিতে গরুর গোস্তের দোকানে প্রায় ক্রেতা শূন্য, হাট,বাজার গুলোতে প্রতিদিন দুই থেকে চারটা গরু জবাই হতো সেখানে একটি গরু জবাই করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গরুর মাংস বিক্রি হয় না।

মন্দা পরিবেশ সৃষ্টি হয় বাজারে গরুর দাম কমতে থাকে গরুর দাম কমলেও বাজারে গোস্তের দাম না আগের মূল্যই বিক্রি করছিলেন কসাইরা। এ অবস্থায় গরুর মাংস কেনার ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে মাংস ব্যবসায়ীরা ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে। গরু জবাই করার আগে গরু পিকাপে ভ্যানে তুলে গ্রামগুলোতে মাইকিং করছে আর ঘুরছে। দাম বলছে প্রতি কেজি ৫৪০থেকে ৫৬০ টাকা। এমন মাইকিংয়ের ক্রেতারাও আকর্ষিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই মাইকিং করে গরুর মাংস বিক্রি করছে।

এদিকে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে চলছে মাইকিং আর হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস, আর সেই মাংস কিনতে দোকানে দোকানে ক্রেতাদের সারি। কদিন আগেও যে মাংস কেজি ৭০০থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ৫৬০ টাকায় কিনছেন ক্রেতারা। কমদামে গরুর মাংস কিনে সাধারণ মানুষরা অনেক খুশি।

সরেজমিনে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা, সানিয়াজান,হাটখোলা,ঘুন্টিঘর,দৈই খাওয়া,কালিগঞ্জ উপজেলার ভুল্লারহাট, হাজরানীয়া ঘুরে দেখা গেছে গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা দোকানে মাইক লাগিয়ে বিক্রি করছে গরুর মাংস। এমন দামে ক্রেতারাও ভিড় করছে মাংসের দোকানে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ হাট-বাজারগুলোতে ৫৪০থেকে ৫৬০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হচ্ছে।

কালীগঞ্জ উপজেলার ভুল্যারহাট বাজারের মোঃ ইসাহাক আলী নামে কসাই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে ৫৪০ টাকায় কেজি দরে মাইকিং করে গরুর গোস্ত বিক্রি করতে শুরু করছে।

অপরদিকে একই এলাকার কসাই ইশাক আলীর গোস্তর দোকানে খুচরা ৫৪০ দরে গরু গোস্ত বিক্রিয় করলেও একসাথে পাঁচ কেজি বা তার বেশি নিলে পাবেন পাইকারি মূল্য, তখন প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে ৫১০/৫২০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ভিতর বাজারের মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন গত ১৫ দিন থেকে গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ৫৬০টাকা দরে। এই দাম অব্যাহত থাকবে।

এমন অবিশ্বাস্য কম মূল্যে গরুর গোশত বিক্রি করায়, সাধারণ মানুষের মাঝে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি প্রতিটি গরু ক্রেতার সামনেই জবাই করে থাকেন।

বড়খাতা বাজারের মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন বলেন,আগে গরুর দাম বেশি ছিল তাই মাংসের দামও বেশি এখন গরুর দাম কমে গেছে তাই আমরা মাংস দামও কম করে নিচ্ছি। আমরা চাই সব মানুষ যেন গরুর মাংস কিনে খেতে পারে।

মাংস ক্রেতা অপু বলেন,আগে মাংসের দাম খুব বেশি ছিল তাই কিনতে পারেনি এখন দাম কমছে তাই আমরা কিনছি। আমরা চাই মাংসের দাম যেন না বাড়ে। মাংসের দাম বৃদ্ধি পেলে আমরাও আর খেতে পারব না।

ভুল্যাহাটের মাংস ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম, আমরা বাজার থেকে ভালো মনের গরু কিনে জবাই করে মাংস ৫৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি। আগে মাংসের দাম বেশি ছিল তাই বিক্রি কমে গেছে। এখন গোস্তর দাম কমায় তার সংখ্যাও বাড়ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল বলেন, বড়খাতা বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা যাতে সুস্থ গরু জবাই করেন তার বিষয়ে আমরা সব সময় তদারকি করি।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মাহমুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন,হাট-বাজারগুলোতে মাংসের দাম কমে গেছে। ৬০০ টাকার উপরে কোন মাংস বিক্রেতা মাংস বিক্রি করতে পারবে না। ইতিমধ্যে আমরা কয়েকজন মাংস বিক্রেতার কাছে জরিমানা আদায় করেছি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT